শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: মুজিব শতবর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভূমিহীনদের বসতঘর প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দকৃত ভোলার দৌলতখান উপজেলায় হরিলুট দূর্নীতির ও নগদ অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাওয়া গেছে। দৌলতখান উপজেলার প্রধানমন্ত্রীর মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসেবে মোট ৪২টি ঘর বরাদ্ধ দেয়া হয়। যারমধ্যে চরপাতা ইউনিয়নে ঘর বরাদ্ধ দেয়া হয় ৪০টি। এবং একটি উত্তর জয়নগর ও অপর ১টি দৌলতখান পৌরসভায়।তবে ৪২টি বসতঘর বিভিন্ন নামে বেনামে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার হোসেনের সহয়তায় নিজ ঠিকাদারকে ঘর নির্মানের দায়িত্বে একক আধিপত্য করেন আকতার হোসেন। তাইতো বিভিন্ন নামে বেনামে অবৈধভাবে লেনদেন সহ অর্থ আত্মসাৎ করার মুল দায়িত্বভার ছিল তার হাতের।ভুমিহীনদের সরকারি ঘর প্রকল্পের অনিয়মের অভিযোগ সরজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে উঠে আসে সরকারি ঘর হরিলুট করা প্রকল্প পরিচালক এর ঠিকাদার আকতারের নাম।
সরকারি প্রকল্পের পিয়নের চাকুরি করার সুবাধে উপজেলার ইএনোর সাথে সক্ষতা হয়। সরকারি প্রকল্পের দুর্নীতির করার মাস্টার মাইন্ড ম্যানেজার আকতার হোসেন।যিনি ঠিকাদারের দায়িত্বভার গ্রহণ করে হরিলুট করা সেই চোরের সাক্ষী মাতব্বর।তাইতো ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরখলিফা ৯ নং ওয়ার্ডে দিনমজুর থেকে অল্পদিনেই নির্মান করেছেন আলিসান বাড়ি। দৌলতখান উপজেলার নির্বাহীর এই প্রকল্পের ব্যক্তিগত ঠিকাদার বলেই ঘর নির্মানে দূর্নীতির ২য় শীর্ষে রয়েছেন তিনি। যিনি বিভিন্ন নামে বেনামে নিজ পরিবারের নামেও সরকারি ৫-৭টি ঘর নিজের নামে করে নেন।এসকল ঘর গৃহহীনদের সরকারি খাসজমিতে নির্মানের কথা থাকলেও অধিকাংশ ঘর আকতারে আধিপত্যই নিজস্ব মালিকানাধীন জমিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
কেউবা সম্পর্কের মোটা অর্থব্যয়ে মাধ্যমে পেয়েছে এসব ঘর। এছাড়াও কিছু ঘর উপজেলার সরকারি কর্মচারীদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সুপারিশ নামে। প্রকল্পের ঘরগুলো সরকারি বিভিন্ন খাস জমিতে নির্মানের কথা থাকলেও অধিকাংশ ঘর উত্তোলন করা হয়েছে উপজেলার ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে। সরজমিন তদন্ত করে চরপাতা ইউনিয়ন চরখলিফা ৮নং ওয়ার্ডে ঘরের সংখ্যা ৯টি। যাহা খাস জমিতে পাওয়া গেলেও অধিকাংশে ঘরের মালিকদের কাছ থেকে প্রকল্পের ঠিকাদার আকতার হোসেন ঘর উত্তোলনের শুরু থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত রাজ মিস্ত্রিদের খাবার খরচসহ অন্যান্য প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ব্যয় বাধ্যতামূলক করেন বলে অভিযোগ ঘর মালিকদের।আবার কয়েকটি ঘরের কাজে আংশিক অসমাপ্ত রেখেই নির্মানকাজ সম্পন্ন দেখিয়ে কাজের বিল উত্তোলন করেন তিনি।আর তার অর্থ আত্মসাৎ সরজমিন তদন্তে বেরিয়ে আসে হরিলুট এর মতো চাঞ্চল্যকর অজানা তথ্যচিত্র। চর খলিফার ৭ নং ওয়ার্ডে ভিন্নচিত্র দেখা যায় যেখানে পরিবারের মোট তিনটি ঘর উত্তোলন করা হয় নিজস্ব ব্যক্তি মালিকানা জমিতে।
ঘর মালিকের নাম জাহাঙ্গীর ও আজিজুল নামে দুটি ঘর তাদের নিজস্ব কিনা সম্পত্তির উপর নির্মান করা হয়।তাদের দাবি সরকারি এসকল ঘর নিজস্ব জমিতে পেতে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়ার অভিযোগ করেন প্রকল্পের ঠিকাদার আকতার হোসেন বিরুদ্ধে। অবৈধ অর্থ নেয়ার মাধ্যমে একই পরিবার দুইটি করে ঘর বরাদ্দ দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে দৌলতখান উপজেলার সাবেক ইউএনও কাওসার হোসেনের বিরুদ্ধে। যার অনিয়মের দূর্নীতির অন্যতম সহযোগী হিসেবে নেপথ্যে আকতার হোসেন। এছাড়াও নিয়োগকর্তা হিসাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের ইন্জিনিয়ার জসিম,তৈয়বুর এবং আকতার হোসেন নওয়াব। চরপাতা ৮ নং ওয়ার্ডের সেলিম ও তার পুত্র সোহাগ এর নামে রয়েছে দুইটি ঘর। মকবুল আহমেদের পুত্র জাহাঙ্গীর ও আজিজলের নামে দুইটি ঘর, রুহুল আমিনের স্ত্রী মাহমুদার নিজ নামে একটি ও তার জামাতা মাকসুদের নামে আরো একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।অপরদিকে চরখলিফা ৭নং ওয়ার্ডে দেখা তার ভিন্ন চিত্র মোট ৯টি ঘর থাকলেও নির্মানধীন রয়েছে তবে যারমধ্যে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে মোট ৪টি ঘর। যেখানে যাদের নামে বরাদ্ধ করা হয়েছে তারা কেউ উক্ত ঘরে বসবাসরত নন। যার একজন মো. সোহাগ যিনি দৌলতখান উপজেলার ইউওনোর ড্রাইভার, একজন উপজেলার চাকুরি রত নারী এবং পরিত্যক্ত ঘরগুলি ইওএনো সহয়তায় নামে বেনামে বরাদ্ধ করিয়ে আকতার হোসেন।যার একটি তার বোন অপর দুটি পাতানো বোনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভুমিহীন মানুষদের স্বপ্নের মুজিবর্ষের উপহার এগুলো যেন হরিলুটের একটি বিশাল কারখানায় পরিনত করেন দৌলতখান উপজেলার গুনধর ইউএনও কাওছার হোসেন ও পরিচালনা দায়িত্বে থাকা প্রকল্পের ঠিকাদার এই আকতার হোসেন। এদিকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হলেও অধিকাংশ নেই কোনো বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা।নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মান ও কয়েকটি ঘরের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই বিল উত্তোলন করেন। এবং নিজস্ব মালিকানা সরকারি ঘর দিতেও হাতিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। দৌলতখান উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ঠিকাদার আকতারের নামে এমটাই অঅভিযোগ ঘর মালিকসহ উপজেলার স্থানীয়রা।এদিকে কাওসার হোসেন বর্তমানে বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলা নির্বাহ হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। উক্ত অনিয়ম ও দূর্নীতি বিরুদ্ধে জানতে চাইলে কাওছার হোসেন জানান, মুজিববর্ষে গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর তৈরি ও বিতরণে তিনি অনিয়ম করেননি। বরং ৪২টি ঘর তৈরিতে তার নাকি ব্যক্তিগত ভাবে আরো ৬ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন বলে জানান। এসকল প্রকল্পের ঘর নির্মানের অনিয়মের পর গনমাধ্যমে ও মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে উক্ত বিষয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক তৈফিক ই-লাহী ও এডিসি (রেভিনিউ) মামুন আল ফারুক কে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
প্রথম ধাপে বরাদ্দ দেয়া প্রকল্পের পরিচালক ও দায়িত্বে ঠিকাদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আগামী দুই একদিনের মধ্যে একটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিবেন বলেও জানান তিনি। এবিষয়ে অভিযুক্ত আকতার হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি তার অভিযোগের পক্ষে কোন প্রকার সত্যতা বা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে পারেনি।জানা যায় নিজের দূর্নীতি ধামাচাপা দিতে সাংবাদিকদের দমতে স্থানীয় সংবাদিকদের মুখবন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন এই দূর্নীতিবাজ আকতার হোসেন নওয়াব।