রবিবার, ২০ Jul ২০২৫, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
বাউফলে অসাধু ব্যবসায়ীর কবলে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ চাঁদাবাজির টাকা নয় সৎ পথে উপার্জিত অর্থ দান করলেন মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ কলাপাড়ায় ক্ষতিকারক সামাজিক রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সম্প্রদায় বিষয়ক সংলাপ বৃষ্টি উপেক্ষা করে কলাপাড়ায় ২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ইউএনওর বদলির খবরে কুয়াকাটায় মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল কলাপাড়ায় যমুনা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম এর পঞ্চম মৃত্যু বাষিকী পালিত বরিশালে দিনে দুপুরে বাসা থেকে মোটরসাইকেল চুরি কড়াপুর পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় শিক্ষকের বাড়িতে ডাকাতি।।১৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ৫০ হাজার টাকা লুট বরিশালে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল কুয়াকাটায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন।। নতুন সাইনবোর্ড পটুয়াখালী জেলার শ্রেষ্ঠ এএসআই নির্বাচিত হলেন কলাপাড়া থানার রাসেল খান ব‌রিশা‌লে সাংবা‌দি‌কের বিরু‌দ্ধে বিএন‌পি নেত্রীর মামলার প্রতিবা‌দে মানববন্ধন ব‌রিশা‌লে সড়‌কে বৃক্ষ রোপন ক‌রে বি‌ক্ষোভ ব‌রিশা‌লে প‌লি‌টেক‌নিক শিক্ষার্থী‌দের বিক্ষোভ
পা‌নির দ‌রে ই‌লিশ ব‌রিশা‌লে

পা‌নির দ‌রে ই‌লিশ ব‌রিশা‌লে

Sharing is caring!

ব‌রিশা‌লে পা‌নির দ‌রে বি‌ক্রি হ‌চ্ছে ই‌লিশ। কথাটা শু‌নে চম‌কে উঠ‌তে হ‌লেও উদাহরণটা প্রায় বাস্তব। যে মাছ ৭ দিন আ‌গেও হাজার টাকা কে‌জি দ‌রে বি‌ক্রি হ‌য়ে‌ছিল , শ‌নিবার তা ৬০০টাকায় বি‌ক্রি হ‌চ্ছে। ৭০০ থে‌কে ৮০০ গ্রা‌মের বড় মাছ বি‌ক্রি হ‌চ্ছে ৪০০ থে‌কে ৫০০ টাকায়। আর আধা কে‌জি সাই‌জের মাছ চল‌ছে ৩০০ টাকায়। পা‌নির দা‌মে।
গত দু‌দিন যাবৎ হঠাৎ করেই বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড মোকামে বেড়ে গেছে ইলিশের আমদানী। সাগর থেকে ট্রলার যো‌গে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। এত বিপুল প‌রিমান ই‌লিশ নি‌য়ে আড়তদারও প‌ড়ে‌ছেন বিপা‌কে। ই‌লিশ রফতা‌নি‌তে নি‌ষেধাজ্ঞা থাকায় পা‌নির দা‌মেই বেচ‌তে হ‌চ্ছে মাছ।

সরেজমিনে শনিবার বেলা ১১ টায় নগরীর পোর্ট রোডস্থ ইলিশ মোকাম ঘুরে চম‌কে উঠ‌তে হয়। পুরো মোকাম জুড়েই ইলিশের ছড়াছ‌ড়ি। চল‌ছে হাঁকডাক।অপর‌দি‌কে সাগর থেকে আসা একের পর এক ট্রলার ভিরছে মোকামে। ট্রলার থেকে ইলিশ খালাসে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন মৎস্য শ্রমিকরা। ই‌লি‌শের কার‌নে মোকা‌মে পা রাখার জায়গা নেই। শ্র‌মিকরা দম ফেলার ফুসরত পা‌চ্ছেন না।

এদিক দাম কমার খবরে নগরীর বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা লাইন দিয়ে এসেছেন চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ কিনতে। পোর্ট রোড ইলিশ মোকামের এমন চিত্র দীর্ঘ দিন পরে বলে দাবি করেছেন ক্রেতা এবং বিক্রেতারা। ব্যাগ ভ‌রে মাছ কিন‌ছেন আগত বে‌শিরভাগ ক্রেতা।

পোর্ট রোডের আড়তদার তালুকদার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. কবির হোসেন বলেন, ‘গত তিন চার দিন ধরেই মোকামে ইলিশের আমদানী বেশি। বিশেষ করে শুক্রবার আমদানী ছিলো তুলনামূলক বেশি। তাই বিক্রিও হয়েছে পানির দরে।

শনিবার এক কেজি’র ওপরে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা থে‌কে ৭০০ টাক দরে। যার প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ২৮ হাজার টাকায়। এক দিন আগে গ্রেড সাইজের এই ইলিশের মন ছিলো ৩৬ হাজার টাকার উপরে এবং খুচরা মূল্যে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১১শত থেকে ১২শত টাকায়।

এছাড়া এক কেজি সাইজের ইলিশ খুচরা ৫০০ থেকে সাড়ে ৫৫০ টাকা এবং পাইকারী প্রতিমন ২২ হাজার টাকা, যা পূর্বের দিনে প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৩০ হাজার টাকায়। ৫শ থেকে ৮শ গ্রামের প্রতিমণ ১৮ হাজার এবং খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা। পূর্বের দিনের মূল্য ছিলো প্রতি কেজি ৬০০-৬৫০ টাকা। প্রতি মণ জাটকা (৩শ থেকে ২৫০ গ্রামের উপরে ৪শ গ্রাম পর্যন্ত) প্রতি মন ১০ হাজার এবং খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ২৫০ টাকা। এক দিন আগে যার প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার টাকায়। সামনের ইলিশের মূল্য আরও কমবে বলে মনে করেন তিনি।

বরিশালের সর্ববৃহৎ ইলিশ মোকাম পোর্ট রোডের আড়তের ইজারাদার ও মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরব হোসেন টুটুল বলেন, ‘ইলিশের আমদানী বেড়েছে কয়েকগুন। শুক্রবার মোকামে সর্বোচ্চ তিন হাজার মোনের বেশি ইলিশ আমদানী হয়েছে। যা বর্তমান মৌসুমের সর্বোচ্চ। এ কারণে ইলিশের দামও অনেক কমে গেছে।

এই মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘ইলিশের আমদানী বেড়লেও ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি নেই। কারণ ইলিশের আমদানী বেশি হলেও ক্রেতার সংখ্যা কম। এমন পরিস্থিতি যে ফ্রিজিং করারও কোন সুযোগ নেই। কেননা বাংলাদেশে ফ্রিজিং করা মাছের চাহিদা নেই। তার ওপর বিদেশী ইলিশ রফতানীতেও সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা না থাকলে ফ্রিজিং করে তা রফতানী করা যেত। সেটা সম্ভব না হওয়ায় ইলিশ পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই আমরা যারা দাদন নিয়ে ব্যবসা করছি তারা মাঠে মরার উপক্রম ঘটেছে। বাধ্য হয়ে পানির দামে ইলিশ বিক্রি করায় পাওয়া টাকাই পরিশোধ করতে পারছি না। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশে রফতানীতে দেয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবিও জানান এই মৎস্য ব্যবসায়ী।

বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘এখন ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। তার মধ্যে গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সমুদ্রে ইলিশ ধরা বন্ধ ছিলো। নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে জেলেরা ১৭-১৮ দিন সামুদ্রে যেতে পারিনি। এ সময়ের মধ্যে ইলিশ অনেক বড় হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মধ্যে ইলিশ ধরার দুটি জো ছিলো। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় দুটি জোতেই ইলিশ সিকার হয়নি। এখন যখন জেলেরা ইলিশ শিকার করতে যাচ্ছে সব ইলিশ এক সাথে ধরা পড়ছে। তাই মোকাম গুলোতে ইলিশের আমদানী বেড়েছে। কমেছে সাগরের ইলিশের দামও। তবে নদীর ইলিশ এখন উঠতে শুরু করেনি। নদীর ইলিশের দামও বেশি। কিছুদিনের মধ্যে নদীর ইলিশের আমদানীও বেড়ে যাবে বলে আশাব্যক্ত করেন তিনি।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD