শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৩:০২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: সময় যতো ঘনিয়ে আসছে আসন্ন কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে ততোই বাড়ছে ফটুবলপ্রেমীদের উম্মাদনা। বিভিন্ন দেশের ফুটবল দলের সমর্থনে এরইমধ্যে বরিশালজুড়ে চলছে ভবিষ্যত প্রত্যাশার আলোচনা-সমালোচনা।
এছাড়া সমর্থনকারী দেশের ফুটবল দলের জার্সি, সেই দেশের পতাকা কেনায় ব্যস্ত দিন পার করছেন ফটুবলপ্রেমীরা। অনেকে আবার সীমানা দেয়াল, ভবনের দেয়াল ও রাস্তা-ব্রিজ-কালভার্টেও সমর্থনকারী দেশের পতাকা একে দিচ্ছেন। এ যেন এক উৎসবের আমেজ। তাই নগরজুড়ে পতাকা বিক্রেতাদের সংখ্যাও বেড়েছে।
এদিকে বিশ্বকাপ খেলা উপভোগ করার জন্য অনেকে প্রজেক্টর ভাড়া নেওয়ার চিন্তা করছেন। সেইসঙ্গে অনেকে নতুন টেলিভিশন কিনেছেন এবং কেনার চিন্তা করছেন।
বরিশাল নগরের গোরস্থান রোড এলাকার বাসিন্দা ও আর্জেন্টিনার সমর্থক শাকিল হাওলাদার বলেন, অফিসেই বড়ভাই-ছোটভাইরা মিলে খেলা দেখার আয়োজন করেছি। এরইমধ্যে এক বড় ভাই খেলা দেখার জন্য টেলিভিশনও কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেইসঙ্গে আর্জেন্টিনার খেলার দিনগুলোতে বিশেষ খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে।
তবে খেলার সময়গুলোতে পাড়া-মহল্লায় প্রজেক্টর ভাড়া নেওয়ার জন্য এরইমধ্যে অগ্রিম বুকিং অনেকেই দিয়ে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান। তিনি বলেন, প্রজেক্টর ভাড়ার দিন ও সময়গুলো দেখে মনে হচ্ছে বরিশালে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সাপোর্টারই বেশি। এরপরের সারিতেই ফ্রান্স, জার্মান, স্পেন ও পর্তুগালের সাপোর্টারদের অবস্থান।
এদিকে পাড়া-মহল্লায় যুব সমাজের উদ্যোগে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনের কথাও জানা গেছে। আলেকান্দা এলাকার বাসিন্দা আলামিন বলেন, বন্ধু ও ছোট ভাইদের মাছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সাপোর্টার সবাই, তাই উভয় দলের খেলার দিনগুলোতে খিচুর খাওয়ার আয়োজন করা হবে। আর এর আগাম প্রস্তুতি আমরা নিয়েও রেখেছি।
এদিকে দেশের পতাকার সঙ্গে বিশ্বকাপে অংশগ্রহনকারী দেশগুলোর পতাকা থাকায় বেঁচাবিক্রি ভালোই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ পতাকা বিক্রেতা আয়নাল হক । তিনি বলেন, সামনে ডিসেম্বর মাস হওয়া বাংলাদেশের পতাকার কদর বাড়বে। তাই চাহিদা থাকায় দেশের পতাকার সঙ্গে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকাও বিক্রি করছি। যদিও এ বছরে জার্সি কেনায় কিছুটা ভাটা পরেছে বলে জানিয়েছেন বরিশালের বৃহত্তর মহসিন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, শীতে খেলা হওয়ার কারণে এবারে শীতের পোশাকের নীচে জার্সি পড়তে হবে। হয়তো এ কারণেই ফুটবলপ্রেমীরা জার্সি তেমন একটা কিনছেন না।
তবে ব্রাজিলের সমর্থক আহমেদ মিনার বলেন, জার্সি গায়ে দিয়ে ঘুরে বেড়ালে কিংবা নিজ দেশে অন্য দেশের পতাকা ওড়ালে নিজেকে জাহির করা ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। আমি একটি দলের সমর্থন করি এবং সেটা মন থেকে। প্রত্যাশাও করছি ব্রাজিল সবকয়টা খেলায় জিতে এবারেও বিশ্বকাপ তাদের ঘরে তুলবে।
এমন প্রত্যাশা রয়েছে আর্জেন্টিনার সমর্থক রাসেল হোসেনের। তিনি বলেন, ফুটবল মানেই আবেগের জায়গা। নিজ দেশ বিশ্বকাপ খেলতে না পারলেও অন্যদের খেলা দেখবো। আর বিশ্বকাপে বরাবরের মতো এবারে আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। সব খেলা না দেখলেও আর্জেন্টিনারগুলো মিস হবে না।
এদিকে বিবির পুকুর পাড়, বঙ্গবন্ধু উদ্যান, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, স্বাধীনতা পার্ক, ত্রিশ গোডাউনসগহ নগরের আড্ডাস্থলগুলোতে যুবকদের সঙ্গে তরুণীদের মুখে মুখেও আসন্ন বিশ্বকাপ নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনা শুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জীবন, কালু, সেলিম, রিপনসহ অনেকে।
তবে যে যে দলের সমর্থকই হোক না কেন সৌহার্দ্য বজায় রেখে বিশ্বকাপ উপভোগ করবে এমন প্রত্যাশা ফুটবলপ্রেমীদের।