রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ঃ
দাবীকৃত ১০ লাখ টাকা চাঁদার টাকা না পেয়ে প্রতিপক্ষ মৃত মোতালেব মিয়ার ছেলে-মেয়েরা সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন মিলে বসতঘরের টিনের বেড়া ভেঙে কয়েক লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।
এমন অভিযোগ এনে চলতি বছরের ২০ আগস্ট বরিশাল আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দমন (দ্রুত বিচার) আদালতে মামলা দায়ের করেছেন নগরীর আলেকান্দা রিফিউজি কলোনির (খালেদাবাদ) সাইদা জাহান লাভলীর (৪৭)।
মামলা দায়েরের পর আসামিদের ভয়ে নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন বাদী।
দায়েরকৃত মামলার নামধারী আসামিরা হলেন- হারুন মিয়া (৫০), হিরণ মিয়া (৪৬), হাসান মিয়া (৪০), তারেক মিয়া (৩৮), মর্জিনা বেগম (৫৫), ও মমতাজ বেগম (৪৮)। আসামিরা বাদীর বসতঘর ভেঙে স্বর্ণ, টেলিভিশন, কম্বল ও টিনের বেড়া ভেঙে কয়েক লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বাদীর স্বামী ফ্রান্সে থাকে সেই সুবাদে প্রতিপক্ষ তার ক্রয়কৃত জমি নানা কূট কৌশলে দখলে নেয়ার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে চলতি বছরের ১৮ আগস্ট অভিযুক্তরা পরিকল্পিতভাবে ওই লুটপাটের ঘটনা ঘটায়।
জানা গেছে, বরিশাল সদর উপজেলার আলেকান্দা মৌজার বগুড়া ৫০ নং জেএল এর ১১৬০ নং এসএ খতিয়ানের ৫৭০৯ নং দাগের ৩.৩৫ শতাংশ জমি গত ০৩/১২/২০১৭ তারিখে বরিশাল সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ১৩৭৬৭ নং সাফ কবলা দলিল মূলে ক্রয় করে জমি ভোগ দখলে রয়েছি।
ঢাকা কামরাঙ্গীর চর এলাকার বাসিন্দা মো. দেলোয়ার হোসেন খান ও তার স্ত্রী মোসা. রিজিয়া বেগম ওরফে রেজিয়া খরিদ সূত্রে ও ওয়ারিশসূত্রে এবং সাফিয়া বেগম ওয়ারিশসূত্রে এই জমি বিক্রি করেন লাভলী ও তার স্বামীর কাছে।
খরিদকৃত জমির মধ্যে ২২ ফুট ৭ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, ১৮ ফুট ৬ ইঞ্চি প্রস্থের মধ্যে টিনশেডের একখানা বসতঘর আছে।
জমির মধ্যে থাকা বসতঘরটি সহ জমি ক্রয় করে লাভলী বসবাস করে আসছে। ঘরটির আনুমানিক বয়স প্রায় ৩৩ বছর। মাঠ জরিপের সময় প্রতিপক্ষ বসতঘরটি আত্মসাৎ করার জন্য কূট-কৌশলে হাল ১৩৫৩৫ নং দাগটি রাস্তার পার্শ্বে পূর্ব পশ্চিম ভোগ দখল মোতাবেক না এঁকে উত্তর দক্ষিণমুখী করে এঁকেছেন এবং লাভলীর জমির দাগটি কাল্পনিকভাবে ওই বসতঘরের মধ্যে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর এঁকে নিয়েছেন। ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত পুরাতন ওই বসতঘরটির হোল্ডিং নাম্বার ছিল-১২০৭।
পূর্বের দাতাও এই পুরাতন ঘরটিতে ২৬/২৭ বছর বসবাস করেছিলেন।
লাভলীর ভাষ্যমতে, সার্ভেয়ার কর্তৃক প্রদত্ত প্রতিবেদনে আপত্তি ও পুনরায় ভূমি পরিমাপের জন্য গত ২০/১০/২০২৪ তারিখে আবেদন পত্রের সাথে LUC ফরম বাবদ ৫০০/- টাকা মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৭২৯ নং চালানের মাধ্যমে দাখিল করি। ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্রের আবেদন পত্রটি এখনও অনুমোদিত না হওয়ায় আমি উক্ত বসতঘরটি এখনও অপসারণ করতে পারিনি।
আবেদনপত্রটি নিষ্পত্তি হলে স্ব-উদ্যোগেই পুরাতন ঘরটি অপসারণ করে নিতাম। সার্ভেয়ার তাপস কুমার মজুমদার তার তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ না করে, ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন রেখেছেন।
যার কলকাঠি নেড়েছেন রওশন আরা খাতুনের ভাগনি সিটি করপোরেশনের স্টাফ মুক্ত। যা অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই জমি নিয়ে বরিশাল জেলা সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা (নং- ২২৬/২৫) চলমান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাদীর জমির পার্শ্ববর্তী জমির মালিক হলেন একই এলাকার রওশন আরা খাতুন।
ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে রওশন আরা খাতুন বাদীর ক্রয়কৃত জমি পরিমাপের জন্য বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বরাবর একটি আবেদন দাখিল করেন।
এ আবেদনের প্রেক্ষিতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) এর সার্ভেয়ার তাপস কুমার মজুমদার সরেজমিনে গিয়ে জমি পরিমাপ করেন এবং তিনি আবেদনকারীর পক্ষে এক তরফাভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আবেদনকারীর ভাগনি মুক্তার মাধ্যমে অবৈধভাবে সার্ভেয়ার তাপস কুমার মজুমদার কে নগদ অর্থ দিয়ে আবেদনকারীর পক্ষে ওই তদন্ত প্রতিবেদন করিয়ে নিয়েছেন।
আর মুক্তার সহযোগিতায় প্রকৃত সত্য গোপন করে আবেদনকারী কে ওই পুরাতন বসতঘরের জমিতে অনুপ্রবেশ করানোর জন্য অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
যা লাভলী সংবাদ সম্মেলনে ব্যক্ত করেছিলেন বলে জানান।